‘মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান’ নিয়ে প্রশ্ন, মুখ খুললেন দীপ্তি চৌধুরী
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশ যখন উত্তাল, তখন দেশের একটি টেলিভিশন টকশোতে কথা বলছিলেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিক ও বিএনপি নেতা গোলাম মাওলা রনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরী। প্রায় ৪৯ মিনিটের ওই টকশোতে শুরু থেকেই বেশ বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনা ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু আন্দোলনে শহিদ হওয়া আবু সাঈদ ভিডিও প্রসঙ্গে কথা বলার সময় উত্তেজিত হয়ে যান বিচারপতি মানিক। এক পর্যায়ে দীপ্তি চৌধুরীকে রাজাকারের সন্তান বলে সম্বোধন করেন। তখন এই কথার কড়া জবাব দেন দীপ্তি চৌধুরি। যা ওই সময় মুহূর্তেই নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে প্রশংসায় ভাসতে থাকেন এই উপস্থাপিকা।
কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই উপস্থাপিকার বয়সসহ নানা বিষয় কটাক্ষ করা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি সামাজিকমাধ্যমে নেটিজেনদের অনেকেই জানতে চান তার ‘মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান’ এই পরিচয়ের সত্যতা। বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে দীপ্তির দাবি করা ‘মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান’ কথাটিকে অনেকে চ্যালেঞ্জ করেন! শুধু তাই নয়, এ নিয়ে দীপ্তিকে কটাক্ষ করে ছড়ানো হয় বহু গুজবে খবর!
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দীপ্তি চৌধুরীকে ট্রলিং-এর মাধ্যমে বুলিং করা হয়। দীর্ঘদিন পর দেশের একটি টেলিভিশন টকশোতে দীপ্তি চৌধুরি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন।
দীপ্তি চৌধুরী আপনার পরিবারে মুক্তিযোদ্ধা কে? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমার মনে হয় এই প্রশ্নটাই আসলে আজকে আমাদের কথা বলার গ্রাউন্ডটি তৈরি করে। আপনি এই প্রশ্নটি নিশ্চয়ই করেছেন কারণ আপনি স্যোশাল মিডিয়াতে এই প্রশ্নটি অনেক দেখেছেন। কিন্তু আপনি উত্তরটি সেই পরিমাণে দেখেননি। উত্তরটি কিন্তু আমি দিয়েছি, উত্তরটি আমি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। নেগেটিভ জিনিস যেভাবে ছড়ায় পজেটিভ জিনিস সেভাবে ছড়ায় না ।
একটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে, যেখানে আমার দাদা মারা গেছেন, আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে। এবং যেখানে তিনি কোন ধরনের মুক্তিযোদ্ধার ক্রেডিট নিতে চাননি। যেখানে আমার পরিবার থেকে আমরা কোন ধরনের সুবিধা নিতে চাইনি সেখানে এই সময়ে দাঁড়িয়ে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার মনে হয় আমার দাদার জন্য অপমানজনক, আমার জন্য অপমানজনক এবং মুক্তিযোদ্ধার পুরো প্রজন্ম যারা কোন সার্টিফিকেট জন্য যুদ্ধ করেননি তাদের জন্য অনেক অপমানজনক।
এই জিনিসটি খুব উদ্দেশ্যপ্রণেদিত ভাবে করা হয়েছে তা বুঝতে বাকি থাকে না। যারা যারা এটি শেয়ার করেছেন তাদের েপ্রাফাইল পিকচার, কাভার ফটো ও স্টোরি দেখলেই বুঝতে পারবেন তারা কোন দল-মত এবং আদর্শ লিড করে। এটা পুরোপুরি একটা ডিসইনফরমেশন ছিল। আমি যখন আমার পরিবারের চারজন মুক্তিযোদ্ধার প্রমাণ হাজির করলাম, সেটা নিয়ে আলোচনা হলো না। কারণ আমাদের মধ্যে সেই ঐক্য নেই।
এই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে যাদের স্বার্থে আমার কথা কাজে লেগেছে, তারা তখন আমাকে নিয়ে নাচানাচি করেছে, তারা আমার ভিডিও শেয়ার করেছে এটা তাদের জন্য লাভজনক হয়েছে। কিন্তু এখন তো আমার মান সম্মান বাঁচানো তাদের লাভের সঙ্গে জড়িত না। তারা কেন শেয়ার করবে যে আমার পরিবারে সত্যিকার অর্থে মুক্তিযোদ্ধা আছে। এবং আমাকে যে অপমান করা হয়েছে সেটার উত্তর তারা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি।
কিন্তু প্রতিপক্ষ কিন্তু অনেক শক্তিশালী, তারা ঐক্যবদ্ধ। তাদের একটাই উদ্দেশ্য যারা এই আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে তাদের নীচু করা। যেটি বেশি ভাইরাল হয় আমাদের মিডিয়া সেটি নিয়ে নিউজ করে কিন্তু আমাদের মিডিয়া সত্য উন্মোচন করতে চায় না। আমি অনেকগুলো মিডিয়াকে দেখেছি যারা দীপ্তি চৌধুরীর পরিবারে মুক্তিযোদ্ধা আছেন কিনা সেটি নিয়ে নিউজ করেছে। কিন্তু তারা আমার পরিবারে মুক্তিযোদ্ধা আছেন কিনা সেটি জানতে আমার কাছে আসেননি।
কিন্তু আমি যখন এটি প্রমাণ করেছি তখন কিন্তু এটি উৎসাহী হয়ে প্রচার করা হয়নি, এটা আমার জন্য ব্যথার। একজন মিডিয়াকর্মী হিসেবে এটা আমার জন্য ব্যথার। এবং আজকে এই প্রশ্নটি এইখানে দাঁড় হওয়ার জন্য আমরা সকলে দায়ী। যারা যারা বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষ আছেন, বুঝতে পারছেন এটা উদ্দেশ্যপ্রণেদিত আমরা যারা আওয়াজ তুলিনি প্রত্যেকে দায়ী।
সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড
৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০
নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]
©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com