ঢাকা, ২২ অক্টোবর, ২০২৪
Banglar Alo

যশোরের রাজারহাটে বেচাকেনা হয়েছে ৩ কোটি টাকার চামড়া

Publish : 11:40 PM, 26 June 2024.
যশোরের রাজারহাটে বেচাকেনা হয়েছে ৩ কোটি টাকার চামড়া

ছবিঃ সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক :

খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় চামড়ার হাট বসে যশোরের রাজারহাটে। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে এখানে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চামড়ার ক্রেতা-বিক্রেতারা এই মোকামে ব্যবসার জন্য আসেন। গত সোমবার কোরবানি ঈদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদের পরদিন গত মঙ্গলবার ছোট পরিসরে এখানে চামড়া কেনাবেচা হয়। আজ শনিবার (২২ জুন) বৃহৎ পরিসরে হাট বসে। এদিন ৩ কোটি টাকার চামড়া হাতবদল হয়েছে। 

এবার, চামড়ার দাম নিয়ে আড়তদার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। আড়তদারা বলছেন, তারা উপযুক্ত দামই দিয়েছেন। ক্ষেত্র বিশেষ সরকার নির্ধারিত দামের বেশি টাকা দিয়ে চামড়া কিনেছেন তারা।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা এবারও চামড়ার দাম পাননি। পাড়া-মহল্লা থেকে বেশি দামে চামড়া কিনে বাজারে এসে দাম না পেয়ে ধরাশায়ী হয়েছেন। এতে লাভ তো দূরের কথা পুঁজিও ওঠেনি অনেকের। আজ সকালে দেখা যায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন যানবাহনে করে রাজারহাটে আনা চামড়া নামিয়ে স্তূপ করে রাখছেন। আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা চামড়া ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখছিলেন। পরে দুই পক্ষই দর কষাকষি করতে শুরু করেন। 

কোরবানির পশুর চামড়ার দামে খুশি নন বিক্রেতারা। ৮০ হাজার বা ২ লাখ টাকার একটি গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে হাটে। অন্যদিকে, ছাগলের চামড়া কিনছেনই না ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা পর্যন্ত ছাগলের চামড়ার দাম পেয়েছেন। এবার ত্রুটিপূর্ণ চামড়া দেখলেই ফিরিয়ে দিতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের। 

খুলনার পাইকগাছা থেকে আসা রাজ কুমার জানান, তারা স্থানীয় পাঁচ জন মিলে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পুঁজি তৈরি করেন। সেই পুঁজি দিয়ে ঈদের দিন পাড়া-মহল্লা ঘুরে ঘুরে চামড়া কেনেন। তার ভাষ্য, এলাকা থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় ছোট গরুর চামড়া, ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় মাঝারি আকৃতির গরুর চামড়া এবং ৯০০ থেকে ১২০০ টাকায় বড় গরুর চামড়া কিনেছেন। হাটে আনার পর সব চামড়ার দামই ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে হয়েছে। ছাগলের চামড়া গড়ে ১০ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। কাটা-ফাটা চামড়া ফেলে দিয়েছেন।

যশোর সদরের ইছালি গ্রামের বিশ্বজিৎ কুমার ১২২ পিস গরু ও ২০ পিস ছাগলের চামড়া নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কাঙ্খিত দাম না পেলেও সব চামড়া বিক্রি করেছেন।  তিনি বলেন, ‘গত ২০ বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে আমি জড়িত। চামড়ার এরকম দরপতন গত ৩-৪ বছর ধরে চলছে। সরকার নির্ধারিত ৫০ টাকা ফুট হলেও দাম পাওয়া যাচ্ছে ২৫ টাকা ফুট হিসেবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়া সংগ্রহ করা, লবণ লাগানো এবং পরিবহন খরচ মিলিয়ে প্রতি পিস চামড়ার দাম ৮০০-৯০০ টাকা পড়েছে। প্রায় একই দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি চামড়া।’

লোকসানের কথা জানিয়েছেন খুলনার পাইকগাছার স্বপন দাসও। তিনি জানান, তিনি ২৪৮ পিস গরুর চামড়া ও ৪৪ পিস ছাগলের চামড়া রাজারহাটে এনেছেন। বড় চামড়া বিক্রি করেছেন ৭০০ টাকায়, আর ছাগলের চামড়া প্রতি পিস ২০ টাকা করে। অথ্যাৎ গরুর চামড়া বিক্রি করেছি ২৫ টাকা ফুট হিসেবে। অথচ সরকার নির্ধারণ করেছে ৫০ টাকা ফুট করে। যেকারণে আমাদের মতো খুচরা ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে না। লাভের মুখ দেখছেন আড়তদার আর ট্যানারি মালিকরা।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত নাম পাচ্ছে না এমন অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় আড়তদাররা। তাদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি টাকা দিয়ে কোরবানির পশুর চামড়া কিনেছেন তারা। কাটা-ফাটা চামড়ার দাম কম। অনেকে ক্ষেত্রে তারা নেননি বলেও জানিয়েছেন।

স্থানীয় আড়তদার হাসানুজ্জামান হাসু বলেন,  ‘সাধারণত বড় আকৃতির গরুর চামড়া ৩৫-৪০ বর্গফুট হয়। মাঝারি আকৃতির গরুর চামড়া ২১-৩০ এবং ছোট আকৃতির গরুর চামড়া ১৬-২০ বর্গফুটের হয়। একেকটি গরুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরিসহ গড়ে ৩০০ টাকা খরচ হয়। গত বছরের তুলনায় এবার লবণের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খরচ কিছুটা বেশি পড়ছে। এরপরও তারা ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে কাঁচা চামড়া কিনেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দাম দিয়েছেন। এখন এসব চামড়া লবণজাত করতে তাদের খরচ বেড়ে গেছে।’

আড়তদার ও জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুল বলেন, ‘শনিবার রাজারহাটে গড়ে ৭০ হাজার পিস চামড়া উঠেছে। এরমধ্যে গরুর চামড়া ছিল ৪০ হাজার পিস। ৩ কোটি টাকার চামড়া হাতবদল হয়েছে। ভালোমানের গরুর চামড়া সরকার নির্ধারিত দামে অথবা কাছাকাছি দামে বিক্রি হয়েছে। খারাপ চামড়ার দাম কমবে এটাই স্বাভাবিক। খুচরা ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম দামে কিনে অনেক বেশি দাম চেয়ে থাকেন। সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানির উদ্যোগ নিলে এই খাত আরও বিকশিত হবে। আবার সরকার খুচরা চামড়া ব্যবসায়ীদের অল্প সুদে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করলে চামড়া ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে।’

Banglar Alo

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলার আলো মিডিয়া লিমিটেড

৮৯ বিজয় নগর, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম শরণি, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট (৫ম তলা)। ঢাকা-১০০০

নিউজঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪১ || [email protected] || বিজ্ঞাপণঃ +৮৮ ০১৩৩২৫২৮২৪৩ || [email protected]

©২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || banglaralo24.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম উপদেষ্টা, সমন্বয়কের প্রতিক্রিয়া শিরোনাম যাত্রাবাড়ীতে ‘জেগে’ আছেন শহীদরা শিরোনাম নির্বাচনের দিন ঠিক করে কাজ-কর্ম শুরু করুন: নীরব শিরোনাম গাজায় স্কুলে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ১০ শিরোনাম ব্যারিস্টার সুমন এতদিন কোথায় ছিলেন? শিরোনাম ব্যারিস্টার সুমন গ্রেপ্তার